দুয়ারে কড়া নাড়ছে ডিজিটাল ওয়ার্ল্ড-২০১৭
আর মাত্র এক মাস। তারপরই শুরু হচ্ছে তথ্যপ্রযুক্তি খাতে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় প্রদর্শনী “ডিজিটাল ওয়ার্ল্ড”। আগামী ৬-৯ ডিসেম্বর রাজধানীর বঙ্গবন্ধু ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্স সেন্টার (বিআইসিসি)-তে ৫ম বারের মতো অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে তথ্যপ্রযুক্তির এই মহাযজ্ঞ। আগামী ৬ ডিসেম্বর সকাল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এবারের “ডিজিটাল ওয়ার্ল্ড ২০১৭” এর উদ্বোধন করবেন।
ডিজিটাল ওয়ার্ল্ড ২০১৭ আয়োজন প্রসঙ্গে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, “প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বলিষ্ট নেতৃত্বে এবং প্রধানমন্ত্রীর আইসিটি বিষয়ক উপদেষ্টার প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশের পথে অনেক দূর এগিয়েছি।আমরা সকল স্টেকহোল্ডারদেরকে পলিসি সহায়তা এবং প্রণোদনা প্রদান করছি, হার্ডওয়্যার সংযোজন ও উৎপাদনের জন্য প্রয়োজনীয় সকল যন্ত্রাংশ ও কাঁচামালে শুল্ক অব্যাহতি দিয়েছি, ডিজিটাল অবকাঠামো নির্মাণ করেছি এবং আমাদের প্রয়োজনীয় দক্ষ জনবল রয়েছে। তাই, আইসিটি-ইকোসিস্টেমের সকল অনুষঙ্গে আমরা এখন প্রস্তুত।”
দেশবাসীকে ডিজিটাল ওয়ার্ল্ডের মহাযজ্ঞে অংশ নেয়ার আহবান জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী পলক আরও বলেন, একবিংশ শতাব্দীতে তথ্যপ্রযুক্তি আমাদের সামনে যেমন অফুরান সম্ভাবনার দুয়ার খুলে দিয়েছে তেমনিভাবে আমাদের কিছু চ্যালেঞ্জেরও সম্মুখীন করছে। এ সকল সম্ভাবনা ও চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবেলার মাধ্যমে নিয়ত পরিবর্তনশীল তথ্যপ্রযুক্তির বৈশ্বিক বাজারে টিকে থাকতে হলে আমাদেরকে আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স, রোবটিক ইঞ্জিনিয়ারিং, সাইবার সিকিউরিটি, বিগ ডাটা এনালাইটিকসহ তথ্যপ্রযুক্তির চলমান ও ভবিষ্যৎ ধারায় নিজেদের প্রস্তুত করতে হবে। আর এসব বিষয়ের উপর সম্যক ধারণা পেতে চলে আসুন বিআইসিসি-তে আয়োজিত “ডিজিটাল ওয়ার্ল্ড ২০১৭” এ বিশাল কর্মযজ্ঞে।
বরাবরের মত আইসিটি ডিভিশনের উদ্যোগে আয়োজিত এই সম্মেলনে আয়োজন সহযোগী হিসেবে থাকছে বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল(বিসিসি), বাংলাদেশ এসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার এন্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেস(বেসিস) ও একসেস টু ইনফরমেশন(এটুআই)।
এবারের প্রতিপাদ্য ধরা হয়েছে “আগামীর জন্য প্রস্তুত-রেডি ফর টুমরো”। মূলত এ প্রতিপাদ্য তথ্য-প্রযুক্তির যুগে বাংলাদেশের অর্জন ও অগ্রগতিকেই প্রতিফলিত করে। বাংলাদেশ এখন আর অনুসরণকারী নয় বরং ভবিষ্যৎ বিশ্বকে নেতৃত্ব দেয়ার জন্য বাংলাদেশ প্রস্তুত। প্রস্তুত মানব সম্পদ; প্রস্তুত অবকাঠামো।
এবারের মেলা বৃহৎ পরিসরে ও আড়ম্বরপূর্ণ পরিবেশে অনুষ্ঠিত হবে। ৪ দিন ব্যাপী এই আয়োজনে গুগল-নুয়ান্সসহ খ্যাতিমান তথ্যপ্রযুক্তি সংশ্লিষ্ঠ প্রতিষ্ঠানের প্রায় দুই শতাধিক বক্তা মোট ২৪ এর অধিক সেমিনারে অংশ নেবে। স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের নিয়ে আইটি ক্যারিয়ার-বিষয়ক সম্মেলনের পাশাপাশি উন্নয়ন সহযোগীদের নিয়ে থাকবে ডেভেলপার সম্মেলন। প্রযুক্তি প্রেমীদের জন্য প্রদর্শনীতে সফটওয়্যার শোকেসিং, ই-গভর্নেন্স এক্সপো, স্টার্টআপ জোন, কিডস জোন, মেড ইন বাংলাদেশ জোন এবং ইন্টারন্যাশনাল জোন ছাড়াও আইসিটি সংশ্লিষ্ট বেশ কিছু প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হবে।
মেলার পার্টনার হিসেবে থাকছে বাংলাদেশ এসোসিয়েশন অব কল সেন্টার এন্ড আউটসোর্সিং(বাক্য),ই-কমার্স এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ(ই-ক্যাব), বাংলাদেশ আইসিটি জার্নালিস্ট ফোরাম(বিআইজেএফ), বাংলাদেশ উইমেন ইন আইটি(বিআইডব্লিউটি), সিটিও ফোরাম।
মেলা চলাকালীন প্রতিদিন সকাল ১০ থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত সম্পূর্ণ বিনামূল্যে সবার প্রবেশাধীকার উম্মুক্ত থাকবে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক অথবা ডিজিটাল ওয়ার্ল্ড এর অফিসিয়াল ওয়েবসইট www.digitalworld.org.bd- এর মাধ্যমে মেলায় প্রবেশের জন্য অগ্রমী রেজিস্ট্রেশন করার সুযোগ রয়েছে।
Facebook page- www.facebook.com/DigitalWorldBangladesh
Facebook event- www.facebook.com/events/513624078991163
.......................................................................................................................................................................................................
শুরু হলো দু’দিন-ব্যাপী জাতিসংঘের এপিআইএস স্টিয়ারিং কমিটির প্রথম অধিবেশন
আজ সকালে ঢাকার হোটেল সোনারগাঁও এ জাতিসংঘের ইকোনমিক এন্ড সোস্যাল কমিশন ফর এশিয়া এন্ড দ্য প্যাসিফিক (এসকাপ) এর এশিয়া প্যাসিফিক ইনফরমেশন সুপার হাইওয়ে (এপিআইএস) এর স্টিয়ারিং কমিটির দু’দিনব্যাপী অধিবেশন উদ্বোধন হলো। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে অর্থ মন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মহিত বলেন, ২০০৮ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্বাচনী ইশতেহারে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তোলার ঘোষণা দিয়েছিলেন। তাঁর সেই ঘোষণাকে বাস্তবতায় রূপ দেয়ার মাধ্যমে গত নয় বছরে বাংলাদেশের আইসিটি খাতে আজ অভাবনীয় উন্নতি হয়েছে। এই খাতকে এগিয়ে নেয়ার মাধ্যমে বাংলাদেশের উন্নয়নের গতি আরও ত্বরান্বিত হবে।
অর্থ মন্ত্রী এ সময় আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, এশিয়া প্যাসিফিক ইনফরমেশন সুপার হাইওয়ে (এপিআইএস) এর মাধ্যমে শুধু বাংলাদেশই নয়, এ অঞ্চলের অন্যান্য দেশগুলোও উপকৃত হবে।
সভাপতির বক্তব্যে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহ্মেদ পলক বলেন, আজ আমি সত্যিই আনন্দিত। আমি সৌভাগ্যবানদের একজনও বটে। ভাবতেই ভালো লাগছে যে, আমি এশিয়ান হাইওয়ে ও ট্রান্স এশিয়ান রেলওয়ে নেটওয়ার্কের সাথে আইসিটি ব্যাকবোনকে সম্পৃক্ত করার প্রস্তাব করেছিলাম। এসকাপ কমিটি অন আইসিটি আমার সে প্রস্তাব গ্রহণ করার মাধ্যমে এশিয়া প্যাসিফিক ইনফরমেশন সুপারহাইওয়ে(এপিআইএস) উদ্যোগ গ্রহণ করে এবং বাংলাদেশকে এই এপিআইএস এর ওয়ার্কিং গ্রুপের সভাপতি নির্বাচিত করে।
প্রতিমন্ত্রী পলক এ সময় আরও বলেন, এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলে তথ্যপ্রযুক্তিভিত্তিক যোগাযোগ ব্যবস্থা নির্বিঘœ করতে জাতিসংঘের এসকাপভূক্ত সকল দেশ মিলে এপিআইএস এর ওয়ার্কিং গ্রুপ একটি মহাপরিকল্পনা চূড়ান্ত করেছে। এপিআইএস এর এই মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নে এপিআইএস এর স্টিয়ারিং কমিটি আগামী দু’দিনে জাতীয়, আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক সহযোগিতার ক্ষেত্র, সমন্বয় এবং বাস্তবায়নের কার্যকর উপায় বের করতে সক্ষম হবে বলে আমি আশাবাদী।
প্রতিমন্ত্রী এ সময় ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের নানাবিধ কার্যক্রম তুলে ধরে আরও বলেন, আমরা বাংলাদেশের সকল নাগরিককে ইন্টারনেট সংযোগের আওতায় নিয়ে আসতে কাজ করে চলেছি। ২০২১ সালের মধ্যে আমরা সবার জন্য ইন্টারনেট সুবিধা নিশ্চিত করতে সক্ষম হব।
অতিথির বক্তব্যে ইউএনএসকাপ এর প্রোগ্রাম ইকোনমিকস এন্ড ফাইন্যান্সিং এর ডেপুটি এক্সিকিউটিভ সেক্রেটারি হং জো হাম বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশের ধারণা বিশ্বের কাছে অনুকরণীয় বলেই তা আজ অনকে দেশ গ্রহণ করেছ। ফলে বাংলাদেশ আজ অন্যান্য দেশের কাছে রাইজিং স্টার।
এপিআইএস ওয়ার্কিং গ্রুপের সভাপতি ও আইসিটি অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বনমালী ভৌমিক স্বাগত বক্তব্যে বলেন, এপিআইএস এর মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন হলে তা মাথাপিছু নি¤œ ব্যান্ডউইডথ ব্যবহারকারী স্বপ্লোন্নত দেশের জন্য অপার সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করবে। এটি বাস্তবায়িত হলে বাংলাদেশে মাথাপিছু ব্যান্ডউইডথ ব্যবহারের হার বৃদ্ধি পাবে এবং তা জিডিপি প্রবৃদ্ধিতে সহায়তা করবে।
অনুষ্ঠানে ট্রান্সপোর্ট ডিভিশনের সচিব জনাব মো: নজরুল ইসলাম বলেন, রেলওয়ে মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব মো: মোফাজ্জল হোসাইন, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সচিব (দায়িত্বপ্রাপ্ত) সুশান্ত কুমার সাহা, অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব (দায়িত্বপ্রাপ্ত) মনোয়ার আহমেদ ও লার্ন এশিয়া বাংলাদেশের সিনিয়র পলিসি ফেলো আবু সাঈদ খান বক্তব্য রাখেন।
উল্লেখ্য যে, এপিআইএস এর মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে স্টিয়ারিং কমিটির এই অধিবেশনে জাতিসংঘের এসকাপভূক্ত ৫৬ দেশের প্রতিনিধিসহ দেশী-বিদেশী শতাধিক প্রতিনিধি অংশ নিচ্ছে। এই অধিবেশনে এপিআইএস এর মহাপরিকল্পনায় অন্তর্ভূক্ত কানেক্টিভিটি, ইন্টারনেট ট্রাফিক ম্যানেজমেন্ট, ই-রেসিলিয়েন্স এবং ব্রডব্যান্ড ফর অল -- এই চারটি স্তম্ভ এবং মধ্যবর্তী মেয়াদে (২০১৬-১৮) বাস্তবায়নের লক্ষ্যমাত্রা পূরণের অগ্রগতি নিয়ে আলোচনা করা হবে।
গত ২৯-৩০ আগস্ট ২০১৬ চীনের গুয়াংজুতে এপিআইএস ওয়ার্কিং গ্রুপের এর দ্বিতীয় সভায় বাংলাদেশকে এক বছরের জন্য ওয়ার্কিং গ্রুপের সভাপতি হিসেবে নির্বাচিত করে। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের আওতাধীন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বনমালী ভৌমিক এপিআইএস ওয়ার্কিং গ্রুপের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছে।
এপিআইএস এর চার স্তম্ভ¬ বাস্তবায়ন এশিয়ার প্যাসিফিক অঞ্চলে ডিজিটাল বিভাজন দূর করায় যেমন ভূমিকা রাখবে তেমনি সংশ্লিষ্ট দেশসমূহের অভ্যন্তরীণ যোগাযোগের ক্ষেত্রে বৈদেশিক ট্রাফিক চলাচলের জন্য বিদ্যমান ব্যয় হ্রাস করবে। একই সঙ্গে স্বল্প ব্যয়ে উচ্চগতির টেরিস্ট্রিয়াল ইন্টারনেট সংযোগ ব্যবহারের সুযোগ ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণের অগ্রযাত্রাকে আরও গতিশীল করবে।
Bangladesh Women ICT Frontier Initiative(WIFI) Launching Women ICT Frontier Initiative(WIFI) শীর্ষক (Training of Trainers Workshop) TOT ওয়ার্কশপ টি আগামী ৩ ও ৪ জুলাই ২০১৭ তারিখে প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁ হোটেলের সুরমা/মেঘনা হল রুমে অনুষ্ঠিত হবে। উক্ত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের মাননীয় স্পীকার "ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী" , বিশেষ অতিথি হিসেবে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মাননীয় প্রতিমন্ত্রী "বেগম মেহের আফরোজ চুমকি" ও তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের মাননীয় প্রতিমন্ত্রী "জুনাইদ আহমেদ পলক" উপস্থিত থাকতে সদয় সম্মতি জ্ঞাপন করেছেন।
পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে: মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, এটুআই, বিসিসি, ডিওআইসিটি ও বেসিস